পতাকা একটি দেশের অস্তিত্ব। একটি জাতির পরিচয়। আমাদের নাম যেমন আমাদের পরিচয় বহন করে, পতাকা তেমনি একটি জাতির পরিচয়কে ধারণ করে। আমরা জাতীয় দিবসগুলোতে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি। পতাকাকে সম্মান দিই। আবার শোক দিবসে পতাকা অর্ধনমিত রাখি। অর্ধনমিত রাখা মানে শোক দিবসে শোক প্রকাশ করা।
অনেক সময় দেখা যায়, দেশের জাতীয় দিন গুলোতে সঠিক ও সুন্দর ভাবেই পতাকা উত্তোলন করা হয়। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে পতাকা পায়ের তলে পড়ে আছে। আজকাল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মানুষজন ছোট্ট পতাকা ব্যবহার করে। দেখা যায় অনুষ্ঠান শেষে অনেকে পা দিয়ে পাড়িয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে পতাকাকে। যা কখনোই কাম্য নয়। অনেকে হয়তো খেয়ালই করেন না। আবার অনেকের ধারণা অনুষ্ঠানতো শেষ। এখন পতাকা আর দরকার নাই। রাস্তায় পড়ে থেকে নষ্ঠ হলে কিইবা যায় আসে। কিন্তু এই অবস্থা কখনোই কাম্য নয়। পতাকা ভীষণ পবিত্র একটি জিনিস। পতাকা আর দেশকে অসম্মান করা মানে; মাকে অসম্মান করা।
মা’ যেমন পরম মমতায় সন্তানকে তার গর্ভে ধারণ করেন, ঠিক তেমনি একটি দেশ ধারণ করে তার জনসংখ্যাকে। মায়ের সম্মান হানী মানে দেশেরই সম্মান হানী। পতাকার অবমাননা মানে একটি জাতিকে অবমাননা করা।
ইতিহাস ও একটি দেশের উন্নয়নের ধারা বিশ্লেষণ করলেই আমরা উপলব্ধি করতে পারবো যে, দেশের মানুষের মধ্যে দেশ প্রেম যতো বেশী, সেই দেশ ততো বেশীই উন্নত। শুধু রাজনীতি বিদদের জন্য নয়, দেশের সকল জনসংখ্যার মধ্যেই দেশপ্রেম মহা এক গুণ। এই গুণের জন্যেই পৃথিবীর অসংখ্য দেশ আজ দরিদ্র অবস্থা থেকে উন্নত জাতির খাতায় নাম লিখিয়েছে।
আমরা আমাদের মা’কে জরাজীর্ণ আর অনাধুনিক দেখতে চাই না। আমাদের মা আধুনিক আর শিক্ষিত হলে, আমরা সন্তানেরাও আধুনিক হয়ে উঠবো। ঠিক তেমনি একটি জাতি উন্নত হলে, সেই দেশের জনগণও উপকৃত হয়। তাই নিজেদের উপকারের স্বার্থে, নিজের দেশের উন্নয়নের স্বার্থে, দেশকে ভালোবাসা আমাদের একান্তই অপরিহার্য্য।
আর দেশকে ভালোবাসতে হলে, দেশের পতাকাকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। পতাকা একটি জাতির পরিচয় তাই শুধু দেশীয় অনুষ্ঠান নয়, পতাকাকে সম্মান করবো সারা বছর, সারা জীবন।
আর নিজের শ্রম, মেধা আর জ্ঞান দিয়ে মান রক্ষা করার চেষ্টা করবো আমার দেশের, আমার পতাকার।
এক্ষেত্রে স্মরণ রাখবো যে, শুধুমাত্র নিজ দেশের পতাকাকে নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পতাকাকেও সম্মান করবো। সারা পৃথিবীর সবাই মিলে মিশে থাকার জন্য। আমরা সবাই ভালো মানুষ হবো।
শুদ্ধ ভাবে নিজেদের গড়ে তুলবো। মেধা, শ্রম আর প্রত্যয় নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবো জাতির পতাকা হাতে।
⇒ফারহানা মোবিন⇐
এম.বি.বি.এস, পোস্ট গ্রাজুয়েশন(পাবলিক হেলথ)
সিসিডি (বারডেম হসপিটাল, ঢাকা)
মেডিকেল কর্মকর্তা, স্কয়ার হসপিটাল, ঢাকা।
স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, অগ্রদৃষ্টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল।